Wellcome to National Portal
মেনু নির্বাচন করুন
Main Comtent Skiped

উপজেলা পরিচিতি

 

আয়তন ও সীমানাঃ

বাংলাদেশের সর্বোত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের পাঁচটি উপজেলার মধ্যে আটেয়ারী অন্যতম। আয়তনঃ ২৯০.০২ বর্গ কিঃমিঃ। এর উত্তরে ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলাউত্তর-পূর্বে পঞ্চগড় সদর উপজেলাপূর্বে বোদা উপজেলাদক্ষিণে ঠাকুরগাঁও সদর ও বালিয়াডাঙ্গী উপজেলা এবং পশ্চিমে ভারতের উত্তর দিনাজপুর জেলা। জনসংখ্যা ১,৩২,৯৪৬ জন । উপজেলা সৃষ্টির তারিখঃ ০৭-১১-১৯৮৩ খ্রিঃ। 

 

স্থানীয় ইতিহাসঃ

১৯০৩ সালে পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি জেলার অধিনে গঠিত হয়। এরপর ঠাকুরগাঁও মহকুমার অন্তরর্ভুক্ত হয় এ উপজেলা । এটি ফতেপুর গ্রামের নাগর নদের পূর্ব তীরে স্থাপিত হয় বলে এই থানার পূর্ব নাম ফতেপুর । এটি বৃটিশ শাসনামলে শালবাড়ি পরগনার অন্তর্ভক্ত ছিল বলে জানা যায়।১৯২৫ সালে ফতেপুরে পাকা ইদারাসহ সুদৃশ্য থানা ভবন নির্মাণ করা হয় । তবে প্রশাসনিক কাজের সুবিধার জন্য ১৯৩৯ সালে সেখান থেকে থানাটিকে বর্তমান রাধানগর ইউনিয়নের ছোটদাপ গ্রামে পূর্ব নাম অপরিবর্তিত রেখে স্থানান্তর করা হয়। ১৯৮০ সালে এ উপজেলা পঞ্চগড় জেলার অন্তর্ভুক্ত হয়। 

 

ইউনিয়নঃ 

ইউনিয়ন-০৬ টিঃ মির্জাপুরতোড়িয়াআলোয়াখোয়ারাধানগরবলরামপুর এবং ধামোর।

 

গুরুত্বপুর্ণ ব্যক্তিবর্গঃ 

১। তারিনী প্রসাদ রায়ঃ আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বর্ষালুপারড়ার জমিদারী প্রতিষ্ঠাতা ।

২। শ্যামা প্রসাদ রায় (বাচ্চা বাবু): আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের বর্ষালুপারড়ার জমিদারীর অত্যন্ত প্রতাবশালী জমিদার এবং ঐতিহাসিক আলোয়াখোয়া মেলা এবং লাহিড়ীহাটের সার্থক রূপকার ।

৩। আলহাজ্ব হেমায়েত আলীঃ বর্তমানে মির্জাপুর ইউনিয়নের নলপুখুরী এলাকায় জন্ম গ্রহন করেন । সহিত্যিক দিনাজপুরের নাজিম উদ্দীন হলের প্রতিষ্ঠাতা । তাঁর নামেই হেমায়েত আলী হল প্রতিষ্ঠিত হয়।

৪। কাদের বকসঃ মির্জাপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহন করেন । ১৯২৪ সাল থেকে অভিভুক্ত ভারতবর্ষের আইন সভার সদস্য ।বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কাজে জড়িত ছিলেন ।তার নামে দিনাজপুর কে.বি.এম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয় ।

৫। মির্জা গোলাম হাফিজঃ জন্ম ২ জানুয়ারী ১৯২০ মির্জাপুরমৃত্যু ২০০০ ইং ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্টের এমপি১৯৭৮ সালে ভূমি প্রশাসক মন্ত্রী১৯৭৯ সালে জাতীয় সংসদের স্পীকার১৯৯১ সালে আইনবিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ।

৬। মির্জা রুহুল আমিন(চোখা মিয়া): মির্জাপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহন করেন। রাজনীতিবিদ,এরশাদ সরকারের মন্ত্রী সভার ভূমি মন্ত্রী এবং কৃষি মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন ।

৭। খান বাহাদুর আমিনুল হকঃ মির্জাপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহন করেন ।বৃটিশ ভারতের উচ্চপদস্থ কর্মচারীসাহিত্যিক১৯৯৬ সালে ঢাকায় মৃত্যু বরণ করেন ।

৮। লায়লা সামাদঃ ১৯২৮ সালে মির্জাপুর গ্রামে জন্ম । পিতা খান বাহাদুর আমিনুল হক ১৯৮৯ সালে মৃত্যু বরন করেন ।

৯। বাহাদুর আমির উদ্দীন সরকারঃ রাধানগর ইউনিয়নের রসেয়া গ্রামে জন্মগ্রহন করেন। তিনি ভুস্বামী ছিলেন ।

১০। মীর কফিল উদ্দীনঃ তড়েয়া ইউনিয়নের কাটালী গ্রামে জন্ম গ্রহন করেন ।তিনি ভুস্বামী ছিলেন ।

১১। মোঃ খাদেমুল ইসলামঃ তড়েয়া ইউনিয়নে জন্ম গ্রহন করেনসাবেক এমপি। মৃত্যু ১৯৯৭ সাল। 

১২। রানী রাস মনিঃ  রাণীগঞ্জ এস্টেট এর জমিদার ছিলেন ।

১৩। শাহজত উল্লাহ সরকারঃ  তড়েয়া ইউনিয়নের ছোপরাঝাড় গ্রামে জন্মগ্রহন করেন । তিনি ভুস্বামী ছিলেন ।

 

ঐতিহাসিক স্থপত্য ও প্রত্ন নির্দশনঃ

মির্জাপুর মসজিদছোপরাঝাড়(পাহাড় ভাঙ্গামসজিদ এবং ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট সর্দারপাড়া মসজিদ মুঘল আমলের মসলিম স্থাপত্যের নিদর্শন । এছাড়া মির্জাপুর গ্রামে ইমাম হোসেনের স্মৃতি বিজরিত ইমামবাড়া সমগ্র উত্তর জনপদের একমাত্র ব্যতিক্রমধর্মী প্রত্ন নিদর্শন। মিজাপুরের পার্শ্ববর্তী বার আউলিয়ার মাজার সকল ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ তীর্থস্থান। এ উপজেলায় মসজিদ-৩০৬ টিমন্দির-৬২টি ও গীর্জা-৪ টি।


 

রাজনৈতিক ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাঃ 

১। সন্ন্যাসী ও ফকির বিদ্রোহ (১৭৬৩-১৮০০)

২। ঐতিহাসিক তেভাগা আন্দোলন ১৯৩৮-৩৯ এবং ১৯৪৬-৪৭ সালে আটোয়ারীর আলোয়াখোয়া গ্রাম থেকে হাজী দানেশকমরেড গুরুদাস তালুকদার,কমরেড মনি সিংকমরেড মংলুকমরেড ডোলী বর্মনী প্রমুখ ব্যতক্তিদের নেতৃত্বে শুরু হয় ।

৩। কৃষক আন্দোলন (১৯৫৮-৬৮)

৪। সত্তরের দশকে ছাত্রলীগের বিভিন্ন শাখার তৎপরতা,ছাত্রলীগের ৬ দফা কর্মসূচী ভিত্তিক ছাত্র আন্দোলন (১৯৬৬-৬৯)

৫। ১৯৭১ সালের মার্চ মাসের অসহযোগ আন্দোলন, মহান মুক্তিযুদ্ধ এবং 

৬। ১৯৯০ সালের গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় এরশাদ সরকার বিরোধী আন্দোলন । আটোয়ারী উপজেলায় মুক্তিযুদ্ধের পুরো সময় ধরে ব্যাপক যুদ্ধ হয়েছে । এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে আটোয়ারী থানা সদর পাক হানাদার বাহীনির নিকট পতন ঘটে এবং ২৩ নভেম্বর ভোরে পাক হানাদার মুক্ত হয় ।

 

প্রধান নদীঃ 

টাঙ্গন, নাগর, পেটকি, সিঙ্গিয়াবাগমারা এই উপজেলার ক্ষুদ্রাকৃতি নদী । যার আয়তন প্রায় ৯৬  হেক্টর ।

 

জলাশয়ঃ

রসেয়া বাধটাঙ্গন ব্যারেজ এলাকাবহুরাণীর বাঁধ প্রভৃতি জলাশয় উল্লেখযোগ্য। বিল ১৪ টি,প্লাবন ভূমি ২৮টি,বড় পিট ২৮০টি। আটোয়ারীসহ সমগ্রপঞ্চগড় অঞ্চল ভূ-বিশেষজ্ঞদের অনুমান অনুযায়ী উত্তরবঙ্গের অন্যান্য প্রাচীন ভূ-ভাগের অনুরূপ প্রাচীনতম পলি ভূমির অন্তরগত। এই উপজেলার মাটির প্রকৃতি অধিকাংশ এলাকা উর্বর। পলি,দোঁয়াশ বেলে-দোঁয়াশ ও কিছু এলাকা স্থল বালুকাময় । উপজেলার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রী সেঃ এবং সর্বোনিম্ন তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রী থেকে ১১ ডিগ্রী সেলসিয়াস। বাষিক গড় বৃষ্টিপাত মোটামুটি ১০০ ইঞ্চি বা ২৫০০ মিঃ মিঃ । এই উপজেলার জলবায়ু কিয়দংশ চরমভাবাপন্ন।

 

প্রাকৃতিক সম্পদঃ 

প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদ নুড়িপাথরঅন্যান্য বালুকাঁচাবালু । বর্তমানে এখানে ব্যক্তিগত  উদ্যোগে চা বাগান গড়ে উঠেছে । 

 

ধর্মীয় ও সাম্প্রদায়ীক শ্রেণীঃ

আটোয়ারী উপজেলায় মুসলিমহিন্দুখ্রিষ্টান ও সর্বপ্রানবাদী ধর্ম সম্প্রদায় বসবাস করেন। হিন্দু সম্প্রদাযের মধ্যে ব্রাক্ষ্মন ক্ষত্রিয়, বৈশ্য ও শুদ্র এবং মুসলমানদের মধ্যে রয়েছে সুন্নীশিয়া ও আহলে হাদীস সম্প্রদায় । মোট জনসংখ্যার মধ্যে মুসলমান ৭৩.৮৬%, হিন্দু ১৫.১৪%, খ্রিষ্টান ১.০৯%, বৌদ্ধ ০১%, অন্যান্য ০.%। সাঁওতাল ও ওরাও ব্যতীত অন্যান্য আদিবাসী সম্প্রদায় হিন্দু ধর্মীয় আচার পালন করে ।

 

আদিবাসী সমাজ ও সংস্কৃতিঃ

এ উপজেলায় বেশ কয়েকটি আদিবাসী ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী বসবাস করে । উপজাতিদের মধ্যে রয়েছে সাঁওতাল, ওরাঁওমুন্ডামাহলীপলিয়ারাজবংশীশুরা,বাউরী,হাড়িঁতাঁতিকিচকবেহাড়া প্রভৃতি। এই সব জনগোষ্ঠী বিভিন্ন লৌকিক অনুষ্ঠান পালনের মাধমে উপভোগ করে তাদের সাংস্কৃতি জীবন। সাঁওতালদের সমাজে তাদের পঞ্চায়েত প্রথার মাধ্যমে নিজেদের নিয়ম কানুন মেনে চলা হয়। এরা নৃত্যগীতের মাধ্যমে পূজা পার্বন এবং উৎসব ও বিবাহ অনুষ্ঠান পালন করে । হাড়িয়া ও পচানী এদের প্রিয় নেশা জাতীয় পানীয়। সোহরাই ও ফাগুয়া আদিবসীদের প্রধান উৎসব। শীতকালে এরা দলবদ্ধভাবে শিকারে বের হয়। খরগোশ, গুইসাপ, কুচিয়া, কাঁকরা এদের মজাদার খাদ্য। সাঁওতাল ও ওঁরাওদের ঘড়বাড়ি মাটির তৈরি ও পরিস্কার পরিচ্ছন্ন। রাজবংশীরা নিজেদের পরিচয় দেয় ক্ষত্রীয় বা ভঙ্গ ক্ষত্রীয়রূপে । এদের সমাজে বিভিন্ন লৌকিক দেবদেবী, পীর পীরানির আস্তানায় পুজা দেয়ার প্রথা প্রচলিত রয়েছে। এরা অধিকাংশ সর্ব প্রাণবাদী। তবে বর্তমানে হিন্দু ধর্মীয় প্রথা পার্বন করে থাকে ।

 

সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানঃ 

মুসলিম সমাজে ঈদুল ফিতর, ঈদুল আযাহা, শব--বরাতঈদ--মিলাদুন-নবী, মহরম, শবেমেরাজ, বিবাহ অনুষ্ঠান, নবান্ন, কুল-খানি,  তিনদিনিয়া, দশাহা, চল্লিশা ও বাৎসরিক বা মৃত্যু বার্ষিকী ।

আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে রয়েছে শুভের পান,কন্যা দর্শনিদিন ধরাজিজ্ঞাস পত্রবাসর বন্ধনঢাকুন আঠোরাভাদরকাটানীজন্মাষ্টমী।


 

স্থানীয় বিশেষ খাদ্যাভাসঃ

পেলকা শাক, সিঁদোলের ভর্তা, সজির খারিয়ামানা কচুর বেশোয়ার, লাফা শাক, সেট শাক খাটাশাক, সীমের বেশোয়ার, ফদগই(কচু ও মিষ্ট কুমড়ার পাতা ও ডাটা দিয়েখরখরিয়া ভাত, মাড়ুয়া ভাত, পয়ড়ার ছাতু, জবের ছাতুকাউনের ভাত, ঢেঁকিয়া শাক, শুক্তা(শুকনা পাট শাক ও সরিষা দিয়েলাউয়ের কড়কড়ি, পেননেতের ভর্তা(কচুর ফুল), মিষ্টি কুমড়ার পায়েসআমরুলের বাঘার।

 

বিবাহ উৎসবঃ

বিবাহের উৎসবের প্রথমে কালাই ভাঙ্গা(গায়ে গলুদঅনুষ্ঠানে মাস কালাই শিল পাটায় বেটে হেরুয়া সহকারে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠান সম্পুর্ন করা হয়। এই অনুষ্ঠানের বর বা কনের সঙ্গে পিড়িতে বসে তাদের দাদী-নানী বা ভাবী স্থানীয়রা । বিবাহ উৎসবে এই এলাকায় ঘটা করে আত্মীয় স্বজনদের দাওয়াদ দিয়ে জিয়াফত খাওয়ানোর স্বচ্ছল বা মোটামুটি অবস্থা সম্পুর্ণ ঘোড়র মানুষের রেওয়াজ । অস্বচ্ছল পরিবারের বিয়েতেও যথা সম্ভব যোগার পাতি করে অনুষ্ঠান করার একটি প্রথা এই এলাকার পরিলক্ষিত হয় । বিয়েকে বাহন হিসেবে পূর্বের পালকিগরু বা মহিষের গাড়ীর স্থান দখল করেছে মাইক্রোবাসমিনিবাস বা নিদেন পক্ষে টেম্পু।

 

প্রচলিত লোক উৎসবঃ

উৎসবের মধ্যে নবান্ন বা লবণ, জিতুয়া পূজা, বিশুয়াচৌপহরিআঠওয়ারীবরেরিয়াচখচুন্নিভেদাইমেছেনি খেলা, জলমাঙ্গাদধিকাদো, আটঘটি হালযাত্রাগোছুরপানালক্ষীপূজাকালি পূজাগরুচুমাভুইরাজামাটি সুরাইচড়ক পূজা ইত্যাদি।

 

লোক সাহিত্যঃ

লোকসঙ্গীত, রূপকথা, ছড়া, লোককাহিনী, প্রবাদ, প্রবচন, পশুকথা, লোক বিশ্বাস, লোকগাঁথা।

 

লোক সঙ্গীতঃ

হেরোয়া বা বিয়ের গান,ভাওয়াইয়া গান,সত্যপীরের গান,জঙ্গের গান,মহরমের গান বা মর্শিয়াইসলামীগান,হুলির গান,জারি গান ইত্যাদি।

লোকগাঁথাঃ পাঁচারী, মানিকপীরের গান, সত্যপীরের পালা, কানা বিশহরির পালা, রাবণ হনুমানের পালা।

 

বিলুপ্ত বা অপ্রচলিত যানঃ

ঘোড়ার গাড়িগাধা ও বলদের পিঠে চড়ে যাতায়াতডুলিপালকি।

 

লোক ক্রিড়াঃ

পাখি লালবাঘবকরীচৌপাইতনুকাটুহুডেন্ঠা কড়িবাট্টাচোরচুন্নিবৌচিএলাটিন বেলাটিন, কুতকুতকইনা দুলাহাসাত ঘরের পকতা।

 

মেয়েলী গান ও সঙ্গীতঃ

হেরোয়া বাবিয়ের গীত, বিবির বেহার গান(মুর্শিয়া),পান সুপারী তুলেদেয়ার গীত(মহরম মাসে বাচ্চার জন্য), কালাই ভাঙ্গার গীত(গায়ে হলুদ), ব্যাঙ কুঠার গান(বৃষ্টির জন্য), জারিগান।

 

নৃত্য(লোক নৃত্য):

মহরমের শরং খেলাহুলির নৃত্য, বিষহরি নৃত্য, পালা গানের রাচ, মাদারের নাচ।

 

লোক নাট্যঃ

চন্দ্রদেবী-মফিজুল ফাতেরা, সাইকেল শোরি-পাম্পার বাউধিয়া, নয়ন শোরি-বোষ্ঠম বাউধিয়া। সমসাময়িক কোন ঘটনাকে কেন্দ্র করে রচিত এই সব লোক নাট্য সংলাপ, সঙ্গীত, নৃত্য সহকারে পরিবেশিত হয়। আটোয়ারী উপজেলায় এই জাতীয় লোক নাট্য হুলির গান বা ধামের নামে পরিচিত। তবে ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর ১৪-ই আগস্ট তোড়িয়া, মির্জাপুররাধানগরইউনিয়ন পরিষদ প্রাঙ্গনে স্থানীয় নাট্যমোদী মানুষের উদ্দেগে নাটক ও যাত্রা পালা প্রতি বছর অভিনীত হয় অভিনীত নাটকের মধ্যে আলোমতি প্রেম কুমারআলাউদ্দীন হোসেন শাহএকটি পয়সা, সাজাহান, সিরাজ উদোল্লাচন্দ্রগুপ্ত, মা-মাটি মানুষ, নূরজাহান প্রভৃতি । এরপর টকোত্তরের স্বাধীনতার পর আটোয়ারী সদরসহ সমগ্র এলাকায় ব্যাপক নাটক ও যাত্রাপালার অভিনয় চর্চা হয়। অভিনীত নাটকের মধ্যে রয়েছে টিপু সুলতান জল্লাদের দরবারটাকা আনা পাইদীপ জেলে যাই, সাগর সেচা মানিকমসনদের মোহ, মেঘে ঢাকা তারামীর কাশিম প্রভৃতি।

 

খেলাধুলাঃ

হা-ডু-ডু, বাঘবকরী, তাস, ফুটবল ও ক্রিকেট । মহিলারা সাধারনত খেলাধুলার সঙ্গে জড়িত থাকে না । বিরল ক্ষেত্রে তাস লুডু খেলার মাধ্যমে বিনোদন করে থাকে।

 

মৃৎ শিল্পঃ 

খেলনা পুতুল, দেবদেবী ছোট মুর্তি, সুদৃশ্য ঘট, সরা, সুরাহি, পুজার প্রদীপ, পঞ্চ প্রদীপ, কুপি, চিত্রিত কলস, হাড়ি-পাতিল, মনসার পট, মানতের হাতিঘোড়া, গরু, মাছ, পেচি, টকা, ফলের টব।

 

বাঁশ শিল্পঃ

ফুলের সাজি, বরণডালি, চিত্রিত কুলা, পাখা, খৈ চালুন, মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ, ধামা, ঝুলিথাট, ডোল, নকশী চাটাই।

 

কাঠ শিল্পঃ

কাঠের বিভিন্ন আসবাব পত্র, খড়ম, পিরি, গাছা, প্রদীপ দানি, কাঠের চাকালাঙ্গল, ছাম-গাহিন, ঢেঁকি।

 

সোলার শিল্পঃ 

সোলার বিভিন্ন মুর্তি, কদম ফুল, বিয়ে বা অন্ন প্রাশনের টোপর ও মালা, ঘট, শ্রদ্ধা ও পূজার মালা।

 

পাট শিল্পঃ 

ধোকরা(পাটের চিকন সুতলী দিয়ে তৈরি বসার ও চৌকিতে বিছানার মাদুর, দেশী কার্পেটশিকা, ব্যাগ, সুতার, পাখা, নকশী কার্পেট।

 

সুতা শিল্পঃ 

নকশী কাঁথা, কাপরে বোনা ফুল-পাতা-দৃশ্য পাখি, ঘড় বাড়ির নকশা, ওয়ালমেট, সুতার পাখা, চাদর।

 

তাঁত শিল্পঃ 

চাদরতোয়ালে, গামছা, লুঙ্গি। এই সব চারু-কারু শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগর শ্রেণীর আর্থিক আবস্থাদূর্দশাপূর্ণ। মৃৎ শিল্প ও বাঁশ শিল্পের সঙ্গে জড়িত অনেকেই তাদের পিতৃ পুরুষের বংশানুক্রমিক ব্যবসায় পরত্যগ করে অন্য পেশায় নিয়োজিত হচ্ছে। সৌন্দর্য ও সৃষ্টিশীল কাজের মূল্য এরা পায় না।

 

যোগোযোগ ব্যবস্থাঃ

বর্তমানে আটোয়ারী উপজেলার গ্রামাঞ্চলের প্রধান যানবাহন হচ্ছে রিক্সা ভ্যান। অন্যান্য যানবাহন বাই-সাইকেল, মোটর সাইকেল, টেম্পু ও মিশুক। বেশি দুরত্বের জন্য রয়েছে বাস, মাইক্রেবাস, মিনিবাস ও কোচ। গরুগাড়ী, মহিষের গাড়ী, ঘোড়াগাড়ী এবং পালকি বর্তমানে বিলপ্ত যানবাহন। এ উপজেলায় রেলপথ প্রায় ১২ কিঃমিঃ । পাকা রাস্তা ৫৮.৭০কিঃমিঃ এবং কাঁচা রাস্তা ৫২১.১৩কিঃমিঃ । ইদানিং নছিমন ও করিমন যানবাহন যোগাযোগের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে।


 

হাট বাজারঃ

ফকিরগঞ্জ হাট, তোড়িয়া হাট, বারঘাটি, গুঞ্জনমারী হাটধামোর হাট-উপজেলার উল্লেখযোগ্য হাট বাজার।